Thursday, January 13, 2011

নোবেল বিজয়, ব্যাংক এবং ক্ষুদ্র ঋণ

এরশাদ মজুমদার 

ছবি. নাসিরুল ইসলাম
ছবি. নাসিরুল ইসলাম
গ্রামীণ ব্যাংক ও ড. ইউনূসকে নিয়ে এখন দেশে তোলপাড় চলছে। সরকার ও সরকারী ল ড. ইউনূসের উপর ক্ষেপে গেছেন। স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী ইউনূসকে নিয়ে নানা কথা বলেছেন যা অশোভন পর্যায়ে পড়ে বলে আমার মনে হয়। ইতোমধ্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিপু মনি, দলের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফ ও ছাত্রলীগের নেতারাও ইউনূসের বিরুদ্ধে অনেক কথা বলে ফেলেছেন। দেশের সুধীজন বলেছেন, অভিযোগের তদন্তের আগে এসব কথা বলা উচিত হয়নি। ইউনূস নিজেই সরকারী তদন্তকে স্বাগত জানিয়েছেন। সুযোগ পেয়ে মিডিয়া ও নানা জন নানা কথা বলতে শুরু করেছেন। যাক শেষ পর্যন্ত সরকার তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন। ড. ইউনূস এখন একজন বিশ্বনাগরিক। দরিদ্র গ্রামীণ নারীদের ভেতর বিনা বন্ধকে ক্ষুদ্র ঋণ বিতরণ করে বিশ্বব্যাপী নাম করেছেন। এজন্যে তিনি নোবেল শান্তি পুরস্কার পেয়েছেন। সে সময়ে দেশের মানুষ আনন্দে আত্মহারা ছিলেন। তখন সরকার বেসরকার সবাই দল বেঁধে ইউনূস সাহেবকে অভিনন্দন জানিয়েছে।
আমাদের দেশে জ্ঞানী-অজ্ঞানী সব মানুষই হুজুগে নাচতে থাকেন। বিখ্যাত এক প্রবাদ আছে, চিলে কান নিয়েছে তাই সবাই চিলের পিছনে দৌড়াতে থাকে। কানওয়ালা কখনও নিজের কানে হাত দিয়ে দেখে না। এখন নরওয়ের টিভিতে অনুসন্ধানমূলক রিপোর্ট প্রচারিত হওয়ার পর আমরা আবার খোঁজ খবর না নিয়েই নাচতে শুরু করেছি। হঠাত্‍ করে নরওয়ে টিভি এ কাজটা করলো কেন তা আমরা ভাবিনি। নরওয়ে সরকারের সাথে হঠাত্‍ করে ইউনূস সাহেবের বিরোধ বাঁধলো কেন।
শুধু গ্রামীণ ব্যাংক নয়, গ্রামীণ ফোন নিয়েও ফিল্ম তৈরি করে প্রচার করা হয়েছে। ওইসব বিশেষ রিপোর্টে বলা হয়েছে ইউনূস সাহেব নোবেল প্রাইজ নেয়ার সময় যে বক্তৃতা দিয়েছেন তাতে নাকি তিনি মিথ্যা তথ্য দিয়েছেন। তিনি নাকি বলেছেন গ্রামীণ ফোন গ্রামের সাড়ে তিন লাখ দরিদ্র মহিলাকে মোবাইল ফোনের সিম দিয়েছেন। নরওয়ের রিপোর্টার বাংলাদেশে এসে গ্রামে গ্রামে ঘুরে দেখেছেন কোথাও কোন গ্রামের দরিদ্র মহিলাকে সিম দেয়া হয়নি। ওই রিপোর্টার আরও বলেছেন, গ্রামীণ ক্ষুদ্র ঋণের কারণে ঋণ গ্রহীতাদের দারিদ্র দূর হয়নি। তারা গ্রামের বহু মহিলার সাক্ষাৎকার গ্রহণ করেছেন। ডকুমেন্টারি ওই ফিল্মের রিপোর্ট বিশ্বব্যাপী অন্যান্য মিডিয়াতেও প্রচারিত হয়েছে। তার ঢেউ এসে লেগেছে বাংলাদেশে। বাংলাদেশ মিডিয়া গ্রামীণ ব্যাংক ও ড. ইউনূস বিষয়ে মাঝে মধ্যে টুকটাক কিছু বললেও সিরিয়াসলি কখনই কিছু বলেনি। ড. ইউনূস নিজেও বাংলাদেশের মিডিয়াকে কখনই নিজের আস্থায় নিতে চাননি। ফলে দেশী মিডিয়া গ্রামীণ ব্যাংক সম্পর্কে সব সময়ই আলো আঁধারীতে ছিল এবং আছে। বেশির ভাগ মানুষই জানে না এই ব্যাংকটি সরকারি না বেসরকারি। এটি কি এনজিও? এটি সমবায় সংস্থা? এটি ব্যাক্তি মালিকানাধীন সংস্থা?
সবাই জানে ১৯৭৬ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির শিক্ষক থাকা কালে ড. ইউনূস জোবরা গ্রামে তার ক্ষুদ্র ঋণ আইডিয়াটি চালু করেন সম্ভবত জনতা ব্যাংকের আর্থিক সহযোগিতা নিয়ে। কিন্তু যে পরিবার ঋণ নিয়েছিল তাতে তাদের ভাগ্যের কোন পরিবর্তন হয়নি। পরে তিনি তার এই চিন্তা-ভাবনা নিয়ে প্রেসিডেন্ট জিয়ার সাথে দেখা করেন। জিয়া সাহেব ড. ইউনূসকে উত্‍সাহিত করার জন্যে বাংলাদেশ ব্যাংককে নির্দেশ দেন। বাংলাদেশ ব্যাংক ড. ইউনূসের আইডিয়াকে একটি প্রকল্প হিসাবে গ্রহণ করে তাকেই প্রকল্প পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দেয়। আমি যত দূর জানি, এটাই ছিল গ্রামীণ ব্যাংক প্রকল্পের যাত্রা শুরু। তখন ড. ইউনূস কিছুদিন বাংলাদেশ ব্যাংকেও অফিস করেছেন। গ্রামীণ ব্যাংকের অফিসিয়াল ওয়েব সাইটে গেলে প্রতিষ্ঠানটির ব্যাকগ্রাউন্ড ইনফরমেশনগুলো পাওয়া যায় না। শুধু বলা হয়েছে ১৯৭৬ সালে ড. ইউনূস ক্ষুদ্রঋণ প্রকল্পটি চালু করেন। ১৯৮৩ সালে প্রেসিডেন্ট এরশাদের আমলে সরকার গ্রামীণ ব্যাংককে পূর্ণাঙ্গ ক্ষুদ্রঋণ সংস্থা হিসাবে স্বীকৃতি দিয়ে একটি আইন পাশ করে। এটা মূলত একটি সরকারী প্রতিষ্ঠান। শুরু থেকেই বাংলাদেশ সরকার গ্রামীণ ব্যাংককে আর্থিক সহযোগিতা দিয়ে আসছে। সাইফুর রহমান সাহেবের আমলে ৩০০ কোটি টাকা ঋণও দেয়া হয়েছিল। এক সময় এই ব্যাংকের সরকারি মালিকানা ছিল ৬০ শতাংশ। পরে আস্তে আস্তে কেমন করে যেন সরকারের মালিকানা ২৫ শতাংশে নেমে আসে। এই ব্যাপারে সরকারের গাফেলতিও কম নয়। এখন নাকি সরকার মাত্র দশ ভাগ শেয়ারের মালিক।
নোবেল পুরস্কার লাভের পর আমি লিখেছিলাম এই প্রাইজ পাওয়া উচিত ছিল বাংলাদেশ সরকার ও ড. ইউনূসের। কিন্তু পেল গ্রামীণ ব্যাংক ও ড. ইউনূস। কারণ সরকারই এই ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা। ওই সময়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্ণর ড. সালেহ উদ্দিনও বলেছিলেন এই ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা সরকার। কী কারণে যেন ড. ইউনূস শুরু থেকেই এই ব্যাংকের প্রতিষ্ঠার ইতিহাসকে গোপন করার চেষ্টা করেছেন। আমি একটি চিঠি লিখে বিষয়টি সম্পর্কে নোবেল পিস কমিটিকে জানিয়েছিলাম। আমার চিঠির একটি অংশ তখন নিউ এজ বা ডেইলি স্টার পত্রিকায় ছাপা হয়েছিল। সেই সময়ে বিদেশী কোন কোন কাগজে বলা হয়েছিল ড. ইউনূস গ্রামীণ ব্যাংকের মাধ্যমে একটি মুসলিমপ্রধান দেশে সুদকে জনপ্রিয় করেছেন। কথাটি মহাসত্য। বাংলাদেশের গ্রামে-গঞ্জে গরীব মানুষ জানতে ও বুঝতে পেরেছে সুদ এবং গ্রামীণ ব্যাংক কী জিনিস। গ্রামের লাখ লাখ মানুষ গ্রামীণ ব্যাংকের ফাঁদে পড়ে সর্বহারা ও গ্রামছাড়া হয়েছে। ঠিক এ সময়ে শেরে বাংলার ঋণ সালিসী বোর্ডের কথা মনে পড়েছে। তখন সুদী মহাজনের জালে আটকা পড়ে লাখ লাখ গরীব মানুষ সর্বস্বান্ত হয়ে পড়েছিল। তখন বেশির ভাগ সুদী মহাজন ছিল হিন্দু ধনী। তারপর এদেশে আসে কাবুলিরা। শেরে বাংলা ঋণ সালিসী বোর্ড করে গরীব মানুষদের রক্ষা করেছিলেন। এনজিওদের কাছ থেকে ক্ষুদ্রঋণ নিয়ে যারা সর্বস্বান্ত হয়েছে তাদের বাঁচাবার জন্যে সরকার এখনও ঋণ সালিসী বোর্ড গঠন করেন নি। ও রকম কিছু করার কোন আলামত দেখছি না। বিগত ৩০ বছরে ক্ষুদ্রঋণের ফলে আমাদের গরীব গ্রামের মানুষের কী উপকার হয়েছে তা দেশবাসী এখনও জানে না। সাবেক অর্থমন্ত্রী মরহুম সাইফুর রহমান সাহেব একবার বলেছিলেন ৩০ বছরে গ্রামীণ ব্যাংক ৬০ লাখ গরীব মানুষের মাঝে ঋণ বিতরণ করেছে। দারিদ্র বিমোচনের কাজটি এই হারে চললে তিনশ’ বছরেও বাংলাদেশের গ্রামীণ দারিদ্র যাবে না। সরকারও ইউনূস সাহেবের নীতি অনুসরণ করতে পারবে না।
সুদী ব্যবসা দ্বারা গরীবের দারিদ্র যায় না। রাষ্ট্রীয় নীতি ছাড়া পৃথিবীর কোথাও দারিদ্র দূর হয়নি। শুধু রাষ্ট্রকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে কতদিনে সে তার জনগণকে দারিদ্র থেকে মুক্তি দিতে চায়। সুদ যে গরীবকে আরও গরীব করে দিতে পারে তা আল কোরান সুস্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছে। তাই আল কোরান সুদকে হারাম ঘোষণা করেছে। আল্লাহর রাসুল বিদায় হজ্বের ভাষণে মহাজনদের সকল সুদ মওকুফ করে দিয়েছিলেন। ওই ঘোষণার মাধ্যমে তত্‍কালীন মক্কা এবং আশেপাশের মানুষ মুক্তিলাভ করেছিলো।
আমরা সত্যিই বড়ই হতভাগ্য। আল কোরান ও রাসুলের (সাঃ) ঘোষণার প্রায় দেড় হাজার বছর পরেও আমরা সামাজিক ও রাষ্ট্রীয়ভাবে সুদী ব্যবসায় জড়িয়ে আছি। শুধু তাই নয়, এই হারামকে রাষ্ট্র প্রশংসিত করেছে। ড. ইউনূস বলেছেন, তিনি ব্যবসা করেন। গ্রামীণ ব্যাংক কোন দাতব্য ব্যবসা নয়। গ্রামীণ ব্যাংক বিনা সিকিউরিটিতে গরীবদের ঋণ দেয়। গ্রামীণ ব্যাংকের ঋণ নিয়ে কতজন গরীব গরীবানা ত্যাগ করতে পেরেছেন তা কোনদিন সরকার বা সমাজ জানতে চায়নি। গ্রামীণ ব্যাংক ৩০/৩৬ পার্সেন্ট সুদ গ্রহণ করে এটা জানার পরও সরকার কখনও কিছু বলেনি। কারণ আজও অজানা। সুদের ব্যবসা করে ড. ইউনূস শান্তিতে নোবেল পাওয়ার পর আমরা নেচেছি গেয়েছি। এখন দল বেঁধে তাকে গালিগালাজ করছি। আবার কেউ কেউ বলছেন, ইউনূসের নামের সাথে বাংলাদেশের মর্যাদা জড়িত। মানে তাকে আর গালাগাল করা ঠিক হবে না।
নোবেল পুরস্কার নিয়ে ইতোমধ্যে তোলপাড় সৃষ্টি করেছে গণচীন। চীনের ভিন্ন মতাবলম্বী গণতন্ত্রী বলে পরিচিত জিউ বাওকে নোবেল পুরস্কার দেয়ায় চীন ক্ষুব্ধ হয়েছে। চীন সরকার তাদের মনোভাব নোবেল কমিটিকে জানিয়েছে। চীনকে সমর্থন করে বিশ্বের অনেক দেশ পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেনি। ফলে নোবেল পুরস্কার বিতর্কিত হয়ে পড়েছে। নোবেল শান্তি পুরস্কার একটি রাজনৈতিক পুরস্কারে পরিণত হয়ে পড়েছে। সরকার বা রাষ্ট্রের আপত্তিকে অগ্রাহ্য করে এর আগেও ইরানের শিরিন এবাদি এবং মায়ানমারের অং সাং সুচিকে নোবেল শান্তি পুরস্কার দেয়া হয়েছে। যুদ্ধরত ফিলিস্তিন ও ইজরায়েলের নেতা আরাফাত ও শ্যারনকে শান্তি পুরস্কার দেয়া হয়েছে। নোবেল শান্তি পুরস্কার সম্পর্কে লোকে নানা ধরনের তামাশা করে। বলে, আপনি আপনার মায়ের বিরুদ্ধে বদনাম করুন আপনাকে পশ্চিমারা নোবেল দিয়ে দিতে পারে। সবচেয়ে মূল্যবান ইস্যু হলো এখন ইসলাম। আপনি ইসলামের বিরুদ্ধে বলুন আপনাকে নোবেল দিয়ে দিবে।
সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. আহমদ শাফি নোবেল নিয়ে একটি প্রবন্ধ লিখেছেন যা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম প্রকাশ করেছে। আমি ড. শাফির সাথে একমত। শান্তি পুরস্কার প্রদানের শক্তিশালী মাপকাঠি হলো এখন রাজনীতি। ড. শাফি বলেছেন বিশ্বের সব পুরস্কারের ক্ষেত্রেই নানা ধরনের রাজনীতি হয়ে থাকে। এশিয়ার নোবেল বলে বহুল প্রচারিত ম্যগ সাই সাই এওয়ার্ডও তেমনি একটি পুরস্কার। বাংলাদেশের বেশ কয়েকজন মানুষ এ পুরস্কার পেয়েছেন। এদের মাত্র কয়েকজনকে পাঠক হয়ত চেনেন। বাকিরা অপরিচিত। কিন্তু পুরস্কারদাতারা তাদের চেনেন। সম্প্রতি আমাদের দেশের একজন নামজাদা এনজিও ব্যবসায়ী স্যার উপাধি পেয়েছেন বৃটেনের রানীর কাছ থেকে। তাঁর পূর্বপুরুষও নাকি ইংরেজদের কাছ থেকে খান বাহাদুর টাইটেল পেয়েছিলেন। আর শুনে একেবারেই আমরা গদগদ। এই ইংরেজরাই ১৯০ বছরে এদেশে কোটি কোটি লোককে হত্যা করেছে। এই দেশটাকে পৃথিবীর দরিদ্রতম দেশে পরিণত করেছে। চীনারা একটি সম্মানিত জাতি বলেই পশ্চিমাদের ফাঁদে পা ফেলে না। জাপানিরা এখনও চীনের কাছে ক্ষমা চেয়ে কুল পাচ্ছে না পূর্বপুরুষের অপরাধের জন্যে।
আমাদের দেশে নানা ধরনের সরকারী পুরস্কার আছে। সব পুরস্কারই এখন রাজনৈতিক পুরস্কারে পরিণত হয়েছে। সরকারের যাকে পছন্দ তাকেই রাষ্ট্রীয় পুরস্কার দেয়া হয়। কেন দেয়া হয় তার কোন কারণ নেই। কবি শিল্পী বুদ্ধিজীবীদেরও রাজনৈতিক ভাগ আছে। একদল হলো আওয়ামী বুদ্ধিজীবী, আরেক দল বিএনপি বুদ্ধিজীবী। এ নিয়ে নাকি প্রচুর তদবির করতে হয়। শুনেছি, গল্প কিনা জানি না, আমাদের এক বন্ধু মন্ত্রীকে বলেছিলেন তাকে একুশে পুরস্কার না দিলে সে সচিবালয়ের ন’তলা থেকে লাফ দিয়ে আত্মহত্যা করবে। সেবার সে একুশে পদক পেয়েছিলো। সরকারকে ধন্যবাদ তাকে পুরস্কার দেয়ার জন্যে। তাই সে এখনও বেঁচে আছে।

এরশাদ মজুমদার : প্রবীণ সাংবাদিক, কলামলেখক ও ঔপন্যাসিক।
WARNING: Any unauthorised use or reproduction of bdnews24.com content for commercial purposes is strictly prohibited and constitutes copyright infringement liable to legal action.

Wednesday, January 12, 2011

মানুষের ১০ আচরণের কার্যকারণ আবিষ্কার

মানুষের মধ্যে বুদ্ধির তাড়না বা বিবেকের দংশন যেমন আছে তেমনি নিজের বা অপরের জন্য ক্ষতির কারণ হতে পারে এমন প্রবৃত্তিও লুকিয়ে আছে। মানুষের মধ্যেই লুকিয়ে থাকা এসব নেতিবাচক এবং ধ্বংসাত্বক প্রবৃত্তির জন্য কে দায়ী আর মানুষই মধ্যে ভালো এবং খারাপের এই সহাবস্থান কেনো সেই অজানা তথ্যই বের করতে পেরেছেন গবেষকরা। গবেষকদের দেয়া তথ্য নিয়ে সম্প্রতি মানুষের ধ্বংসাত্মক কাজের পেছনে লুকানো গোপন সেই শত্রুর পরিচয় প্রকাশ করেছে লাইভ সায়েন্স অনলাইন । মানুষের ধ্বংসাত্মক সেই ১০ টি আচরণ নিয়েই এবারের ফিচার।
গল্পবাজি
গবেষকেরা দাবি করেছেন, বিবর্তন প্রক্রিয়ার ফলেই মানুষ অন্যের সঙ্গে গালগল্প করতে এবং একে অন্যের খুঁত বের করে অভ্যস্ত। মানুষের মধ্যে একে অন্যের দোষ খুঁজে বেড়ানোর এই প্রক্রিয়াটা বিবর্তন প্রক্রিয়ায় আসার ফলে এই ঘটনায় মানুষের মধ্যে কোন দুঃখবোধ জাগে না। 

গবেষক রবিন ডানবার জানিয়েছেন, ‘বেবুনদের একে অপরের লোম বেছে দেবার মতো আচরণগুলোকে সামাজিক বন্ধন শক্ত করার উপায় বলে চিহ্নিত করা হয়। কিন্তু মানুষের ক্ষেত্রে এই আচরণের আরও বেশি বিবর্তন ঘটেছে, তাই আমরা একে অপরের সমালোচনায় ঘন্টার পর ঘণ্টা আঠার মত লেগে থাকতে পারি। এই আচরণ গুলো সবাই জন্মের পর কোন না কোন ভাবে অন্যের কাছ থেকে শেখে।’

গবেষণায় আরও জানা গেছে, মানুষ গল্পবাজ হবার কারণেই মানুষের মধ্যে বিভেদ তৈরি হয়। তখন বিভক্ত মানুষ ব্যক্তি স্বার্থ চরিতার্থ করতেই কাজ করে।

গবেষকরা জানিয়েছেন, সমালোচনার ক্ষেত্রে বেশিরভাগ সময় সঠিকভাবে সত্যকে তুলে আনার উদ্দেশ্য থকে না। এতে কেবল সমালোচনা বা দোষ ধরার জন্যই সমালোচনা করা হয়। সমালোচনায় নানা বিষয় বানিয়ে যেমন বলা হয়, অনেক সময় তৃতীয় কারো দ্বারা প্রভাবিত হয়েও কেউ কেউ এমন গর্হিত কাজটি করে মানুষ।
জুয়া, বাজি ধরা
গবেষকরা জানিয়েছেন, জুয়া বা বাজি ধরার বিষয়টিও আমাদের জিনগত। আমাদের নিউরনের মধ্যেই খেলে বেড়ায় জুয়া বা বাজি ধরার মতো নেতিবাচক কাজের উপলক্ষ্য। গবেষকরা আরো জানিয়েছেন, বানরেরাও বাজি ধরতে পারে। এক গবেষণায় দেখা গেছে, সামান্য জুস পাবার আশায় তারা তাদের হাতের কাছে থাকা ভালো খাবার ছেড়ে দিতে প্রস্তুত থাকে। নিউরন সাময়িকীতে প্রকাশিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, মাথার ভেতরকার জিতে নেওয়া সম্পর্কিত সার্কিট কোন কিছু জিতে নেবার প্রেরণা হিসেবে কাজ করে বা জিতে নেবার ইচ্ছা বাড়াতে সহায়তা করে। কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটির গবেষক লুক ক্লার্ক জানিয়েছেন, ‘কোন বিশেষ কারণে জুয়া বা বাজিতে হেরে যাওয়া আরও বেশি করে বাজি ধরতে উষ্কানি দেয়।’

দুশ্চিন্তা 
গবেষকরা জানিয়েছেন, দুশ্চিন্তা হার্টের সমস্যা বাড়ায় এমনকি এর ফলে ক্যান্সার পর্যন্ত হতে পারে। এমনকি চূড়ান্ত হতাশার কারণে মানুষ আত্মহত্যা পর্যন্ত করে বসে। আধুনিক জীবনধারণ পদ্ধতিই এর কারণ হতে পারে বলে গবেষকরা আশংকা করছেন। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার মতে, বিশ্বজুড়ে ছয় লাখেরও বেশি জনকে সপ্তাহে ৪৮ ঘন্টার বেশি সময় কর্মক্ষেত্রে কাটাতে হয়। স্মার্ট ফোন, ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের মতো আধুনিক অনেক প্রযুক্তির কারণে মানুষ কাজ ও বিশ্রামের সময়টুকু আলাদা করে উপভোগ করতে ভুলে যাচ্ছে। 

গবেষকরা আরো জানিয়েছেন, মানুষের কাজের ধরন ছাড়াও বর্তমানের প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়িয়ে দিচ্ছে তাদের দুশ্চিন্তা।

শরীরে ছিদ্র, ট্যাটু ও নক্সা আঁকা
২০১৫ সালের মধ্যে আমেরিকার শতকরা ১৭ ভাগ মানুষ বিভিন্ন কসমেকিট প্রক্রিয়ায় দেহের বিভিন্ন অংশকে সাজাবে, দেশটির কসমেটিক শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর পক্ষ থেকে সম্প্রতি এমন ভবিষ্যতবাণীই প্রচার করা হয়েছে। অন্যদিকে গবেষকরা জানিয়েছেন, কসমেটিক সার্জারির ফলে মানুষের স্বভাবিক চেহারা দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে। শরীরের নক্সা আঁকা, ট্যাটু করার চর্চা কিবদন্তীর হলেও এত বৈচিত্র্য ছিলো না। আগেকার দিনে গোত্র পরিচয়, ধর্মীয় কারণ, পদ মর্যাদা, ক্ষমতার চিহ্ন হিসেবে লোকে গায়ে ট্যাটু বা বিভিন্ন নক্সা আঁকত। কিন্তু এখন কেবল দেহের সৌন্দর্য বাড়ানোর জন্যই এটা করা হচ্ছে বলে গবেষকদের মত। 

ভয় দেখানো 
এক জরিপে দেখা গেছে, স্কুল পড়–য়া শিশুদের অর্ধেকেরই ভয় পাবার অভিজ্ঞতা রয়েছে। ২০০৯-এ ইউরোপের এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, শিক্ষার্থীরা স্কুলে আসার পর কোনো না কোনোভাবে ভয়ের শিকার হয় এমনকি তাদের কম বেশি সবাই আবার নিজের বাড়ি থেকেও ভয় পায়। গবেষকরা জানিয়েছেন, ভয়ের এই উৎপত্তি আসলে পরিবার থেকেই।

এক গবেষণায় দেখা গেছে, আমেরিকার ৩০ ভাগ অফিসে বস বা সহকর্মীদের দ্বারা আতঙ্কের শিকার হয়েছেন শ্রমিকেরা। গুজব, চাকরি হারাবার ভয় ছড়িয়ে এই ভয়ের সৃষ্টি করা হয়েছে তাদের মনে।
 
অ্যারিজোনা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক সারাহ ট্রেসি জানিয়েছেন, ‘উচ্ছৃক্সখলতা থেকেই এই ধরনের ভয় দেখাবার মতো আচরণের জন্ম।’


মিথ্যা বলা
মানুষের মিথ্যা বলার কারণও বের করেছেন গবেষকরা। গবেষকরা জানিয়েছেন, মিথ্যা বলার সঙ্গে মনের সম্পর্ক রয়েছে। ম্যাসাচুসেটস ইউনিভার্সিটির গবেষক রবার্ট ফেল্ডম্যান জানিয়েছেন, শতকরা ৬০ ভাগ মানুষই কথা বলার সময় প্রতি ১০ মিনিটে অন্তত একটি মিথ্যা কথা বলেন।’ তবে, গবেষকরা আরো জানিয়েছেন, ‘মিথ্যা বলা কিন্তু ততোটা সহজ কাজ নয়। সত্যি বলার চেয়ে এতে ৩০ ভাগ বেশি সময় লাগে। সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, এখন সোশ্যাল নেটওয়ার্কিংসহ ই-মেইলে মিথ্যা বলা হয় সবচেয়ে বেশি। 

ধোঁকা দেওয়া
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের গবেষণা প্রতিষ্ঠান পো জানিয়েছে, মানুষের বেখাপ্পা আচরণগুলোর মধ্যে ধোঁকা দেওয়ার বিষয়টি সবচেয়ে আকর্ষণীয়।’ জরিপে দেখা গেছে, প্রতি পাঁচজন আমেরিকানের এক জন মনে করে ট্যাক্স ফাঁকি দেওয়া নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য, অথবা তাদের মতে এটা আসলে কোনো নৈতিক বিষয়ই নয়। আর জরিপ মতে, দেশটির দশভাগ লোক কোনো না কোনো ভাবে নিজের বউকেই ধোঁকা দিয়ে বেড়ায় । গবেষণায় দেখা গেছে, উঁচু দরের নৈতিকতা পোষণ করেন এমন লোকেরা আবার জঘন্য এই ধোঁকাবাজির শিকার হয়ে আত্মহত্যাও করেন। তবে এমন শক্ত প্রকৃতির লোকেরাও আবার ঘুরিয়ে হলেও বিশ্বাস করেন, প্রয়োজনীয় মুহুর্তে ধোঁকাবাজি নৈতিকভাবে মেনে নেবার মতো একটি আচরণ। 

চুরি করা
কথায় বলে, চুরি বিদ্যা বড়ো বিদ্যা যদি না পড়ো ধরা। কিন্তু গবেষকরা জানিয়েছেন, এই চুরি বিদ্যাটা আসলে বংশগত হবার আশংকাই বেশি। গবেষকরা জানিয়েছেন, নিজের দরকারের কারণেই কিন্তু চোরেরা চুরি করে। কিন্তু ক্লিপ্টোম্যানিয়াকরা চুরি করে মজা লোটার জন্যে। ৪৩ হাজার মানুষের মধ্যে চালানো এক জরিপের ফল বলছে, তাদের এগারোভাগ কোনো না কোনোভাবে একবারের জন্য হলেও দোকানে গিয়ে চুরি করেছে।

সন্ত্রাস
মানুষের জানা ইতিহাসের মধ্যে সন্ত্রাস আর নৈরাজ্যের খোঁজ পাওয়া যায় হরহামেশাই। গবেষকদের দাবি, জিনগত বৈশিষ্ট্য এবং প্রাপ্তির অনুভূতি মাথার ভেতর জট পাকিয়ে সন্ত্রাস চালাতে বাধ্য করে। ২০০৮ সালের এক গবেষণার ফল বলছে, মানুষ যৌনতা, খাবার ও ড্রাগস নেবার মতোই সন্ত্রাস করার জন্য ব্যগ্র থাকে। সাইকো ফার্মাকোলজি জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদনে জানা গেছে, মস্তিষ্কের কিছু কোষ সন্ত্রাস ঘটাবার জন্য ব্যগ্র থাকলেও এর পেছনে আসলে থাকে অন্য কোনো প্রাপ্তির আশা।

টেনেসির ভেন্ডারবিল্ট ইউনিভার্সিটির গবেষক ক্রেগ কেনেডি জানিয়েছেন, ‘সকল মেরুদণ্ডীদের মধ্যেই আক্রমণাত্বক আচরণ লক্ষ্য করা যায়। সঙ্গী, বাসস্থান এবং খাবারের মতো গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ আয়ত্তে আনা ও ধরে রাখার জন্য এর সন্ত্রাস চালায় তারা। এজন্য দায়ী ডোপামিন নামের হরমোন।

বদ অভ্যাস
মানুষ অভ্যাসের দাস। গবেষকরা জানিয়েছেন, ক্রমাগত বদ অভ্যাসের লালন করাটাই বদ অভ্যাস তৈরিতে প্রধান ভূমিকা রাখে। অনেক পরিচিত বদ অভ্যাসের সম্ভাব্য ঝুঁকি সম্পর্কে জানার পরও লোকজনের পক্ষে তা পুরোপুরি ত্যাগ করা কষ্টকর হয়ে দাড়ায়।

মানুষের বদ অভ্যাসের পেছনে লেগে থাকার কারণ হিসেবে গবেষকরা জানিয়েছেন, মানুষের মধ্যেই লুকিয়ে থাকা অবাধ্যতা, সত্যিকারের ঝুঁকি বুঝতে না পারা, এ বিষয়ে ব্যক্তিগত অনুভূতি এবং আসক্তির ফলেই বদভ্যাসের জন্ম। এর জন্য মানুষের কিছু খারাপ জিনই দায়ী।

World's Tallest Man, Sultan Kosen, Meets One Of The World's Shortest, He Pingping

8-foot, 1-inch Kosen comes from a small village of 320 people in Turkey. He was diagnosed with pituitary gigantism at the age of 10.

Stocks on abnormal rebound

Reversing the trend of the last few days, Dhaka stockmarket yesterday clocked a record 15 percent gain.
The general index of Dhaka Stock Exchange (DSE) stood at 7,512 points at the close of the day's trading, recouping 1,012 of 1,235 points it lost on the previous two days.
On Monday, the country's premier bourse suffered the steepest plunge in its 55-year history, prompting the regulator to suspend trading less than an hour after the start of transactions.
Of the 243 issues traded yesterday, 195 hit the upper band in their prices and touched the circuit breaker, which does not allow price of a stock to go up or down by a certain limit for the day.
The sprint left 80 percent of the traded securities without sellers for hours.
Experts see the turnaround as a result of "life support" given by the government and the regulators after the stock index slumped by 660 points on Monday.
In an effort to bring back confidence in the investors, Bangladesh Bank and Securities and Exchange Commission (SEC) that day relaxed or reversed some of their decisions.
In addition, the SEC yesterday withdrew the restrictions on mutual funds' exposure to the stockmarket. The mutual funds can now buy a single company's stock or invest in a particular sector without limits.
Previously, they could not buy over 10 percent of a single company's stock or own over 25 percent of a particular sector.
Institutional investors, particularly the commercial banks, are believed to have put buy-pressure on the market, BRAC-EPL, an investment firm, said in its routine analysis.
Retail investors soon followed suit though there were not enough sellers. The unusually high buy-pressure pushed the index extremely higher early in the morning and kept it at that level for most of the day, it added.
Due to the stalemate in the buy-sell, the single turnover was very low -- only Tk 977 crore.
Experts, however, have doubts over sustainability of the market.
"It seems the market has bounced back with an artificial life support, and the rise is not sustainable," said Mirza Azizul Islam, former finance adviser to caretaker government and former SEC chairman.
Salahuddin Ahmed Khan, professor of finance at Dhaka University, said such jump in the index is undesirable.
"It shows the investors are still not mindful of the market and the reality," said Salahuddin, who had also served as DSE's chief executive officer for five years.
An asset manager, who did not want to be named, said the regulators are injecting life elixir into the market to calm the nervous investors who had gone into a panic sale.
But that does not mean the market should go through the roof on a single day, he added. “Both abnormal rise and fall are not good for the market."
Other insiders, however, said the leap was expected following the regulatory steps. "Obviously, the investors will want the prices of the shares they hold to go to the level at which they bought those," said one.
"Why will they sell the shares before that?" he asked.
Meanwhile, investors demonstrated outside different merchant banks and offices of institutional stockbrokers, as they could not get credit for share purchase at 1:2 ratio determined by the regulator.
Trading at Al-Arafah Islami Bank and IDLC Securities remained suspended for some time because of the agitation. Mercantile Bank and Prime Bank too saw demonstrations.
The houses told the aggrieved investors that they did not have the capacity to provide loan at 1:2 ratio.
Later, many banks and institutional stockbrokers agreed to give loan at a higher ratio though not at 1:2.

Tuesday, January 11, 2011

Facebook generation loneliest

Reveals BBC Radio survey

Britain's 16- to 24-year-olds, the so-called Facebook generation, are lonelier than any other age group, even pensioners.

One in three said they were bored with their lives, compared to just eight percent of pensioners, and 28 percent complained that loneliness was making them unhappy.

More than a quarter revealed they turned to alcohol for comfort, and half admitted to using junk food as an emotional crutch, reports the Daily Mail.

The depressing picture of life for young people in Britain emerged from a survey into national happiness levels, conducted for BBC Radio 3.

Asked what made them unhappy, 70 percent of the Facebook generation said finances topped their list of concerns.

More than a third were worried about holding down a job, compared to a quarter of middle-aged respondents.

One in three said they were tormented by family or relationship problems, and they were also the age group that were most likely to struggle over their social status.

Overall, money was the biggest cause of unhappiness across all age groups, above work, relationships and loneliness.

But while older age groups shared the Facebook generation's finance fears, they were more fulfilled in other areas of their lives.

Almost a third of the youngest generation reported they had relationship problems, which dropped to just eight percent among 55 to 64-year-olds.

Behavioural psychologist Jo Hemmings said: "Real friendships are made through shared experiences and bonds. Some social networking "friends" are barely even acquaintances, without any real meaning or intimacy."
 

Monday, January 10, 2011

আইপ্যাডের নতুন সংস্করণ আসছে

আইপ্যাডের নতুন সংস্করণ আসছে আইপ্যাড ট্যাবলেট কম্পিউটারের নতুন সংস্করণ 'আইপ্যাড-২' বাজারে আনছে অ্যাপল।
কন্টেস্ট শেয়ারিং ওয়েবসাইটের প্রতিষ্ঠাতা কেভিন রোজ জানান, 'আগামী তিন-চার সপ্তাহের মধ্যে আইপ্যাড-২ বাজারে ছাড়া হবে বিক্রির জন্য।' আইপ্যাড-২-এ রয়েছে উন্নতমানের রেটিনা ডিসপ্লে, ভিডিও চ্যাটের জন্য সামনে ও পেছনে উভয় দিকেই ক্যামেরা এবং মিনি ইউএসবি পোর্ট। গত মাসে প্রযুক্তিবাজারে অ্যাপলের নেঙ্ট জেনারেশন আইপ্যাড আসার যে গুজব রটেছিল, ধারণা করা হচ্ছে আইপ্যাড-২ হবে তাদের সেই নতুন প্রজন্মের ট্যাবলেট কম্পিউটার। তবে নতুন সংস্করণের এ ট্যাবলেট কম্পিউটার বিষয়ে এখন পর্যন্ত আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য দেয়নি অ্যাপল কর্তৃপক্ষ।

বন্ধ হচ্ছে না ফেইসবুক

এ বছরই বন্ধ হয়ে যাবে ফেইসবুক_ওয়েববিশ্বে ছড়িয়ে পড়া এ গুজবকে ভিত্তিহীন বলে জানিয়েছে ফেইসবুক। কিছুদিন ধরে ফেইসবুক ও টুইটারে ছড়িয়ে পড়ে ফেইসবুক বন্ধের গুজব। ফেইসবুকের প্রধান নির্বাহী জুকারবার্গ কিছুদিন আগে সংবাদ সম্মেলনে জানান, দ্রুত ব্যবহারকারী বৃদ্ধির কারণে ফেইসবুক ব্যবস্থাপনা ক্রমান্বয়ে জটিল হয়ে পড়ছে। প্রায় ৫০ কোটি ফেইসবুক ব্যবহারকারীর পাশাপাশি প্রতিনিয়ত নতুন সদস্য যোগ হওয়ায় ফেইসবুক পরিচালনায় হিমশিম খেতে হচ্ছে। এ চাপ ফেইসবুক কর্তৃপক্ষের জন্য সামাল দিয়ে ওঠা সহজ নয়।
জুকারবার্গের এ মন্তব্যের পর থেকেই গুজব রটে, ১৫ মার্চ থেকেই বন্ধ হয়ে যাবে ফেইসবুক। সারা বিশ্বের ফেইসবুক ব্যবহারকারীদের অনেকেই এ গুজবকে সত্য বলে মনে করার পরিপ্রেক্ষিতেই আনুষ্ঠানিকভাবে গুজবকে অস্বীকার করল ফেইসবুক।

সব বিধিনিষেধ উঠে গেল ঋণসীমা ১:২ পর্যন্ত বৃদ্ধি (এসইসির সিদ্ধান্ত)

এসইসির সিদ্ধান্তসব বিধিনিষেধ উঠে গেল ঋণসীমা ১:২ পর্যন্ত বৃদ্ধি পুঁজিবাজারে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (এসইসি)। বাজারের ঊর্ধ্বগতি ঠেকাতে বিনিয়োগের পথে এসইসি যত ধরনের বিধিনিষেধ আরোপ করেছিল, গতকাল সোমবার তার সবই তুলে নেওয়া হয়েছে।
গতকাল শেয়ারের বিপরীতে ঋণসীমা বাড়ানো, স্পট মার্কেট থেকে ১৪ কম্পানিকে স্বাভাবিক লেনদেনে ফিরিয়ে আনা, ঋণসুবিধার বাইরে থাকা কম্পানির শেয়ারে আর্থিক সমন্বয় বা নেটিং-সুবিধা চালুসহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেয় এসইসি। আজ মঙ্গলবার থেকেই এসব সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে। 
গতকাল বিকেলে এসইসির সভাকক্ষে আয়োজিত এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এসব সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়। এ সময় ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই-সিএসই) ও মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
শেয়ারের বিপরীতে ঋণসীমা বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোও। গতকালই বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান আজ থেকে ঋণসীমা বাড়ানোর নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। মার্চেন্ট ব্যাংকার্সদের সংগঠন বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনও (বিএমবিএ) ঋণসীমা বাড়ানোর জন্য তাদের সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। গতকাল সন্ধ্যায় বিএমবিএর এক জরুরি সভা থেকে এ আহ্বান জানানো হয়।
এদিকে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এসইসিসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা আশা প্রকাশ করেন, এসইসি ও বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সরকারের ইতিবাচক বিভিন্ন পদক্ষেপের ফলে শেয়ারবাজারে আবারও স্থিতিশীলতা ফিরে আসবে। একই সঙ্গে বিনিয়োগকারীদের আতঙ্কিত না হওয়ারও আহ্বান জানানো হয়।
শেয়ারবাজারে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে এসইসি যেসব পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে, তার মধ্যে একটি হচ্ছে গ্রাহকের ঋণসীমা ১ঃ২ নির্ধারণ। এর ফলে কোনো বিনিয়োগকারী নিজে এক লাখ টাকা বিনিয়োগ করলে তার বিপরীতে সর্বোচ্চ দুই লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণসুবিধা পাবেন। তবে কোন প্রতিষ্ঠান কী হারে ঋণ বিতরণ করবে, সেটি নির্ভর করছে ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর নিজস্ব সিদ্ধান্তের ওপর।
ঋণসীমা বাড়ানোর পাশাপাশি স্পট মার্কেট নামের নগদ টাকার মার্কেটে থাকা ১৪ কম্পানিকে মূল বাজারে ফিরিয়ে আনা হবে। দাম বাড়ার লাগাম টানতে গত ৫ ডিসেম্বর এসব কম্পানিকে স্পট মার্কেটে স্থানান্তর করা হয়। এ ছাড়া ঋণের বাইরে থাকা কম্পানির (নন-মার্জিন) ক্ষেত্রে আর্থিক সমন্বয়সুবিধা চালু করা হয়।
গতকাল মার্চেন্ট ব্যাংকের বিনিয়োগক্ষমতার ওপর থেকেও বিধিনিষেধ তুলে নিয়েছে এসইসি।
আগে মার্চেন্ট ব্যাংকগুলো আন্ডাররাইটার ও পোর্টফোলিওতে তার পরিশোধিত মূলধনের পাঁচ গুণের বেশি বিনিয়োগ করতে পারত না। কিন্তু আজ থেকে সে ধরনের কোনো সীমা থাকছে না।
এসইসির এসব সিদ্ধান্তের পাশাপাশি পুঁজিবাজারের স্থিতিশীলতার স্বার্থে বাংলাদেশ ব্যাংকও বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। পুঁজিবাজারের সঙ্গে সরাসরি সংশ্লিষ্ট এ রকম সিদ্ধান্ত পরিপালনে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সম্পৃক্ত থাকার ঘোষণা দিয়েছে।
গতকাল শেয়ারবাজারে দরপতনকে ঘিরে দেশজুড়ে যে অস্থির অবস্থা তৈরি হয়, তারই পরিপ্রেক্ষিতে সরকারের ওপর মহলের নির্দেশে দুই নিয়ন্ত্রক দফায় দফায় সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নিয়ে গতকাল জরুরি বৈঠকে বসে। এসব বৈঠকের পর দুই নিয়ন্ত্রক সংস্থা এসব সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।
এর আগে এসইসি সকাল থেকে দুই স্টক এক্সচেঞ্জ ও মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠক করে। ওই বৈঠকের পর নিজেরা ফের বৈঠকে বসে। একই সঙ্গে টেলিফোনে কেন্দ্রীয় ব্যাংকসহ সরকারের বিভিন্ন মহলে যোগাযোগ করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে এসইসির চেয়ারম্যান জিয়াউল হক খোন্দকার বলেন, তারল্য সংকটের কারণেই শেয়ারবাজারে আজকের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধি গোলাম মোর্তুজা আহমেদ বলেন, মার্চেন্ট ব্যাংকগুলো গ্রাহকদের যে ঋণসুবিধা দিয়ে থাকে, তার বেশির ভাগই আসে ব্যাংকিং চ্যানেল থেকে। বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়ম অনুযায়ী ব্যাংকগুলো একক ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে তার পরিশোধিত মূলধনের ১৫ শতাংশের বেশি ঋণ দিতে পারে না। এ নিয়মের কারণে বেশির ভাগ মার্চেন্ট ব্যাংক মূল প্রতিষ্ঠান বা ব্যাংকিং চ্যানেল থেকে চাহিদামাফিক ঋণসুবিধা পাচ্ছে না। তাই ব্যাংকিং চ্যানেলে অতিরিক্ত তারল্য থাকলেও এর কোনো সুফল পুঁজিবাজারে মিলছে না।
সংবাদ সম্মেলনে এসইসি আরো জানিয়েছে, দরপতনের কারণে কোনো বিনিয়োগকারীর ঋণে কেনা শেয়ার জোরপূবর্ক বিক্রির (ফোর্স সেল) আওতায় পড়লেও এ ক্ষেত্রে ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো নমনীয় থাকবে।
ডিএসই সভাপতি শাকিল রিজভী বলেন, শেয়ারবাজারে দাম কমলে আবার দাম বাড়বে। তাই বিনিয়োগকারীদের আস্থা হারানোর কিছু নেই।
সিএসই সভাপতি ফখরুদ্দিন বিনিয়োগকারীদের ভীত না হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, দেশের অর্থনীতিতে এমন কোনো খারাপ খবর বা ঘটনা ঘটেনি যাতে পুঁজিবাজার ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তিনি বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনারা ভীত হয়ে শেয়ার বিক্রি করবেন না। এতে নিজেরা ক্ষতির মুখে পড়বেন। বেশির ভাগ বিনিয়োগকারী যদি ভীত হয়ে শেয়ার বিক্রি না করেন তাহলে বাজারে বড় ধরনের কোনো দরপতন ঘটবে না।’
সংবাদ সম্মেলনে এসইসির চেয়ারম্যান জিয়াউল হক খোন্দকার, সদস্য মনসুর আলম ও ইয়াছিন আলী, ডিএসইর সভাপতি শাকিল রিজভী, জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি নাসিরউদ্দিন চৌধুরী, প্রধান নির্বাহী সতিপতি মৈত্র, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সভাপতি ফখরুদ্দিন আলী আহমেদ, সহসভাপতি আল মারুফ খান, মার্চেন্ট ব্যাংকার্স প্রতিনিধি গোলাম মোর্তুজা আহমেদ ছাড়া দুই স্টক এক্সচেঞ্জের কর্মকর্তা, এসইসি নির্বাহী পরিচালকরা উপস্থিত ছিলেন।
বিএমবিএর সিদ্ধান্ত : বিএমবিএর গতকালের বৈঠকে শেয়ারবাজারের স্থিতিশীলতা ফেরাতে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সভায় প্রতিটি মার্চেন্ট ব্যাংককে আগামীকাল থেকে নিজ নিজ সাধ্যের সর্বোচ্চ সীমা ব্যবহার করে ঋণ বাড়ানোর আহ্বান জানানো হয়। একই সঙ্গে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আÍবিশ্বাস ফেরানোর উদ্যোগ গ্রহণেরও আহ্বান জানানো হয়।
একই সঙ্গে গতকালে সভায় বিএমবিএ নতুন সভাপতি মনোনীত হন প্রাইম ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী গোলাম মোর্তুজা আহমেদ। তিনি আরিফ খানের স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন।
গোলাম মোর্তুজা কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমরা প্রতিটি মার্চেন্ট ব্যাংককে ঋণসীমা বাড়ানোর অনুরোধ জানিয়েছি। প্রতিটি মার্চেন্ট ব্যাংক যেন ঋণ বাড়ানোর ক্ষেত্রে তাদের সাধ্যমতো সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা নেয়, সেই আহ্বানও জানিয়েছি। আশা করছি, সব মার্চেন্ট ব্যাংক এ আহ্বানে সাড়া দেবে।’
জানা গেছে, রাষ্ট্রায়ত্ত বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশও (আইসিবি) আজ থেকে গ্রাহকদের সর্বোচ্চ ঋণ সুবিধা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির মহাব্যবস্থাপক ইফতেখারুজ্জামান কালের কণ্ঠকে বলেন, এসইসির সিদ্ধান্ত যথাযথ পরিপালনে আইসিবি সব সময় প্রস্তুত।
বেসরকারি বেশ কয়েকটি ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানও আজ থেকে ঋণসীমা বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে। তবে কী পরিমাণ ঋণসুবিধা প্রতিষ্ঠানগুলো বাড়াতে পারবে, গত রাত পর্যন্ত তা নিশ্চিত করা যায়নি।
গতকাল পর্যন্ত ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো এসইসির বেঁধে দেওয়া নিয়ম অনুযায়ী বিনিয়োগকারীদের সর্বোচ্চ ১ঃ১.৫ হারে ঋণসুবিধা দিতে পারত। কিন্তু তারল্য সংকটের কারণে বেশির ভাগ ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানই গ্রাহকদের সর্বোচ্চ সীমার ঋণ দিতে ব্যর্থ হয়েছে। হাতে গোনা কয়েকটি মার্চেন্ট ব্যাংক বা ব্রোকারেজ হাউস ছাড়া কেউই গ্রাহকদের ১ঃ১ হারের বেশি ঋণ দিতে পারেনি।

আতঙ্কে শেয়ারবাজার বন্ধ

আতঙ্কে শেয়ারবাজার বন্ধঅব্যাহত মূল্যধসে সারা দেশে বিক্ষোভ, ভাঙচুর, আগুন শেয়ারবাজারের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো গতকাল সোমবার দেশের       
দুই স্টক এক্সচেঞ্জে শেয়ারের লেনদেন বন্ধ করে দেওয়া হয়। 
টানা কয়েক 
দিনের ধারাবাহিক দরপতন ঠেকাতে না পেরে ১১টা ৫০ মিনিটে সাময়িক
লেনদেন বন্ধ ঘোষণা করে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (এসইসি)।
তবে এর আগেই মাত্র ৫০ মিনিটে প্রধান শেয়ারবাজার ডিএসইতে সূচক কমে
৬৩৫ পয়েন্ট। অনেকের ধারণা, গতকাল নিয়ন্ত্রক সংস্থা এসইসি লেনদেন 
বন্ধ না করলে পতনের ভয়াবহতা হতো অনেক বেশি। অবশ্য দিন শেষে 
আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে আজ মঙ্গলবার সকাল থেকে আবার লেনদেন 
শুরুর ঘোষণা দেয় এসইসি। 
গত ছয় দিনের টানা দরপতনে সূচক মোট কমেছে প্রায় ১৮০০ পয়েন্ট। তবে গতকাল লেনদেন বন্ধের পর থেকে বাজার উত্তরণে এসইসি, বাংলাদেশ ব্যাংক ও দুই স্টক এক্সচেঞ্জের নেতারা পৃথক বৈঠক করেন। সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ে যোগাযোগ করে এসইসি কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।

গতকাল লেনদেন বন্ধের পরপরই রাজধানীসহ সারা দেশের লাখ লাখ বিনিয়োগকারী রাস্তায় নেমে আসে। ঢাকায় বিক্ষুব্ধ বিনিয়োগকারীরা রাস্তায় নেমে গাড়ি চলাচল বন্ধ করে দেয়। ঘটে বিক্ষোভ, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা। রাজধানীর পল্টন থেকে শুরু করে বিক্ষোভ দৈনিক বাংলা, মতিঝিলসহ সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় পুলিশের সঙ্গে দফায় দফায় সংঘর্ষ, অগ্নিসংযোগ, লাঠিপেটা ও টিয়ার শেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। বিকেল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত চলতে থাকা এসব ঘটনায় রাজধানীতে চারজন সাংবাদিকসহ একাধিক সাধারণ বিনিয়োগকারী আহত হন। আটক করা হয় ৯ জনকে। 
দিন শেষে অবশ্য তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়।
পরে বিকেলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসইসি চেয়ারম্যান জিয়াউল হক খোন্দকার জানান, অস্বাভাবিক দরপতনের পরিপ্রেক্ষিতে শেয়ারবাজারে লেনদেন কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে। মাত্র আধা ঘণ্টায় সূচক ৬০০ পয়েন্ট পড়ে যাওয়ার পর বিনিয়োগকারীদের স্বার্থেই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে প্রথম হলেও পৃথিবীর অনেক দেশেই লেনদেন কার্যক্রম বন্ধ রাখার নজির রয়েছে। তবে মঙ্গলবার থেকে আবারও স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় লেনদেন হবে।’
গতকাল শুরুতেই প্রায় সব কম্পানির শেয়ারের দর বৃদ্ধি ঘটে। তবে তার ¯দায়িত্ব ছিল মিনিট পাঁচেক। এ সময় আগের পাঁচ দিনের অব্যাহত ভয়াবহ দরপতনে আতঙ্কিত বিনিয়োগকারীরা দ্রুত শেয়ার বিক্রি করে দিতে থাকে। ফলে ৫০ মিনিটের মধ্যেই ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সাধারণ সূচক আগের দিনের তুলনায় প্রায় ৯ শতাংশ বা প্রায় ৬৬০ পয়েন্ট নেমে যায়। যদিও দিন শেষে সমন্বয়ের পর সূচক ৬৩৫ পয়েন্ট কমে দাঁড়ায় ছয় হাজার ৪৯৯-তে। 
গতকাল একই সময়ে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক প্রায় ৭ শতাংশ বা প্রায় ৯১৪ পয়েন্ট নেমে যায়। এ সময়কালে ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ২২৩টি প্রতিষ্ঠানের ২১৯টিরই ব্যাপক দরপতন ঘটে। এ অবস্থাায় পুঁজিবাজারে আরো বড় ধরনের ধস ঠেকাতে বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে দুই স্টক এক্সচেঞ্জকে লেনদেন কার্যক্রম বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয় এসইসি। সেই পরিপ্রেক্ষিতে সকাল ১১টা ৫০ মিনিটে লেনদেন বন্ধ করে দেওয়া হয়। দেশের ইতিহাসে এর আগে কখনো বাজার চলাকালে লেনদেন বন্ধের ঘটনা ঘটেনি।
বিক্ষোভ, ভাঙচুর : লেনদেন বন্ধ ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে বায়তুল মোকাররম মসজিদের সামনে একদল বিক্ষুব্ধ বিনিয়োগকারী রাস্তা বন্ধ করে দেয়। এতে দৈনিক বাংলা মোড়মুখী যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। একই সময়ে মতিঝিলের ডিএসই ভবন ও এর আশপাশে হাজার হাজার বিনিয়োগকারী রাস্তা অবরোধ করে। এ সময় মতিঝিল এলাকায় চারটি প্রাইভেট কারও ভাঙচুর করা হয়। ফলে ইত্তেফাক মোড় থেকে শুর“ করে শাপলা চত্বর পর্যন্ত যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পুরো এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে আতঙ্ক।
এ সময় পুলিশের সঙ্গে বিনিয়োগকারীদের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। পুলিশের সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার একপর্যায়ে বিনিয়োগকারীরা রাস্তার দুই পাশের বিভিন্ন ভবনে আটকে পড়ে। এ সময় মতিঝিলের বিভিন্ন গলিমুখ ও মধুমিতা ভবন থেকে বিনিয়োগকারীরা পুলিশের উদ্দেশে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। পুলিশও পাল্টা ইট নিক্ষেপ করে। বিনিয়োগকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে তিন রাউন্ড টিয়ার শেলও নিক্ষেপ করে তারা। ১২টার দিকে পুলিশের বেপরোয়া লাঠিপেটায় চারজন সাংবাদিক আহত হন। তাঁদের মধ্যে গুরুতর আহত আমাদের অর্থনীতির মাসুদ ও শীর্ষ নিউজের মর্তুজাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। এদিকে বিক্ষিপ্ত এসব সংঘর্ষকালে ৯ বিনিয়োগকারীকে আটক করা হয়। দিন শেষে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।
অন্যদিকে পল্টন থেকে দৈনিক বাংলা মোড় হয়ে মতিঝিলের শাপলা চত্বর পর্যন্ত কোনো পুলিশি পাহারা না থাকায় বিনিয়োগকারীরা ইচ্ছামতো বিক্ষোভ দেখায়। জীবন বীমা টাওয়ারে অবস্থিত এসইসি ভবনের উদ্দেশে ইটপাটকেল ছোড়ে এবং রাস্তায় আগুন জ্বালিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করতে থাকে। এখানে দুপুর সোয়া ১টার দিকে সিটিবাস নামের যাত্রীবাহী একটি বাস ভাঙচুর করা হয়। জনতা ব্যাংক ভবনের মোড়ে বিনিয়োগকারীরা জনসভার জন্য নির্মিত একটি মঞ্চের বাঁশ জড়ো করে তাতে আগুন ধরিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে। এদিকে দুপুর আড়াইটার দিকে পুলিশ বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশে হাত-মাইকে অবরোধ তুলে নিতে অনুরোধ করে। বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে বিনিয়োগকারীরা বিভিন্ন ভবন থেকে নেমে বাড়ি ফিরে যায়। এরপর পরিস্থিতি ক্রমেই স্বাভাবিক হয়ে আসে।
অর্থমন্ত্রী ও ডিএসইর সভাপতির পদত্যাগ দাবি : ধারাবাহিক দরপতনের জন্য বিনিয়োগকারীদের ক্ষোভের তীর ছিল বাংলাদেশ ব্যাংকের দিকে। গতকাল সে ক্ষোভ পড়ে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ও ডিএসইর সভাপতি শাকিল রিজভীর ওপর। মতিঝিল এলাকায় বিক্ষোভ চলাকালে বিনিয়োগকারীরা মাঝেমধ্যে এ দুজনের পদত্যাগ দাবি করে স্লোগান দেয়। মধুমিতা ভবন থেকে হাতে লেখা ছোট একটি চিরকুট ছড়িয়ে দেওয়া হয়। এতে অর্থমন্ত্রী ও ডিএসইর সভাপতি শাকিল রিজভীর পদত্যাগ দাবি করা হয়।
ঢাকার বাইরেও বিক্ষোভ, ভাঙচুর 
পুঁজিবাজারে দরপতন অব্যাহত থাকায় গতকাল ঢাকার বাইরেও বিভিন্ন ¯স্থানে বিক্ষোভ করেছে বিনিয়োগকারীরা। সিলেটে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। রাজশাহীতে বিনিয়োগকারীরা ১০টি ব্রোকারেজ হাউসে তালা লাগিয়ে দেয়। চট্টগ্রামের বিনিয়োগকারীরা বাজারে ধসের জন্য এমএলএম ব্যবসা, বুকবিল্ডিং মেথডের মাধ্যমে কিছু কম্পানির সুবিধা গ্রহণ এবং এসইসির ব্যর্থতাকে দায়ী করে অর্থমন্ত্রী, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ও এসইসির চেয়ারম্যানের পদত্যাগ দাবি করে। বরিশাল ও রংপুরেও বিক্ষোভ হয়েছে। কুমিল্লায় বিনিয়োগকারীদের বিক্ষোভ মিছিলে পুলিশের লাঠিপেটায় কমপক্ষে ১৫ জন আহত হয়েছে। এ সময় পুলিশ ৯ জনকে আটক করে। নোয়াখালীতে বিক্ষোভের খবর পাওয়া গেছে।
চট্টগ্রাম : গতকাল পুঁজিবাজারে ভয়াবহ ধসের কারণে লেনদেন বন্ধ হওয়ার পরপরই বিনিয়োগকারীরা রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। নগরীর আগ্রাবাদ, প্রেসক্লাব চত্বর, চকবাজার, মুরাদপুর ও বহদ্দারহাটে তারা দফায় দফায় বিক্ষোভ করে। একপর্যায়ে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সামনে রাস্তায় ব্যারিকেড দিলে পুলিশ তাদের লাঠিপেটা করে সরিয়ে দেয়। পরে বিনিয়োগকারীদের একটি দল ১০ দফা দাবি নিয়ে সিএসইতে স্মারকলিপি দেয়।
গতকাল সকালে লেনদেন শুর“ হওয়ার ৫০ মিনিটের মধ্যেই চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক ১৩৯৬ পয়েন্ট পড়ে যায়। ভয়াবহ ধসের আশঙ্কায় এর পরই সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (এসইসি) সিদ্ধান্তে সকাল ১১টা ৫০ মিনিটে লেনদেন বন্ধ করে দেওয়া হয়। এর পরপরই ব্রোকারেজ হাউসগুলো থেকে বিনিয়োগকারীরা রাস্তায় নামে। বিকেল ৩টা পর্যন্ত তাদের বিক্ষোভ চলে।
গতকাল ৫০ মিনিটের লেনদেনে সিএসইতে ১৫৬টি কম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দাম বেড়েছে কেবল সাতটির। দাম কমেছে ১৪৭টি কম্পানির শেয়ারের। এ সময় লেনদেন হয়েছে প্রায় সাড়ে ৪৪ কোটি টাকার শেয়ার। এই অল্প কয়েক মিনিটের লেনদেনেই সিএসইর বাজার মূলধন প্রায় ১৮ হাজার কোটি টাকা কমে যায়।
সিএসইর প্রধান নির্বাহী ড. আবদুল্লাহ মামুন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমরা বিনিয়োগকারীদের দাবি এসইসিতে পাঠিয়ে দেব। ধসের জন্য কারা দায়ী সেটা বলতে পারছি না। তবে বাজারে অর্থের জোগান কমে গেছে সেটা বোঝা যাচ্ছে।’
সিলেট : বিনিয়োগকারীরা ¯স্থানীয় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ অফিসের সামনের প্লাস্টিকের নেমপ্লেট ভেঙে ফেলে। তারা মিছিল নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক সিলেটের গ্লাস ভাঙচুর করে। দিনের প্রথম এক ঘণ্টা লেনদেনের পর ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে কেন্দ্রীয়ভাবে লেনদেন বন্ধ করে দেওয়া হয়। এর পরই বিনিয়োগকারীরা রাস্তায় নেমে আসে। তারা চৌহাট্টায় আরএন টাওয়ারের তৃতীয় তলায় ডিএসইর কার্যালয়ের নেমপ্লেট ভেঙে ফেলে। পরে সেখান থেকে বিক্ষোভকারীরা মিছিল নিয়ে তালতলায় বাংলাদেশ ব্যাংকের গ্লাস ভাঙচুর করে। পুলিশ বাধা দিলে তারা সেখান থেকে ফিরে এসে ডিএসইর কার্যালয়ের সামনে প্রতিবাদ মিছিল করে। 
বরিশাল : পাঁচটি ব্রোকারেজ হাউসের বিনিয়োগকারীরা গতকাল সকাল ১১টার দিকে নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের সামনে থেকে বিক্ষোভ করে। পরে সদর ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের সামনে এসে তারা জড়ো হয়। সেখান থেকে মিছিল করে কিছু দূর এগোলে পুলিশ তাদের বাধা দেয়।
রাজশাহী : শেয়ার লেনদেন বন্ধ রেখে নগরীতে দিনভর ব্যাপক বিক্ষোভ করেছে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা। দুপুর ১২টা থেকে বিকেল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত তারা সাহেববাজার এলাকায় দফায় দফায় বিক্ষোভ সমাবেশ করে। সেখান থেকে তারা অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের পদত্যাগ দাবি করে। এর আগে তারা নগরীর ১০টি ব্রোকারেজ হাউসে তালা লাগিয়ে দেয়। ভাঙচুরের আশঙ্কায় সব ব্রোকারেজ হাউসে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। 
রংপুর : অব্যাহত দরপতন এবং ঢাকায় আটক বিনিয়োগকারীদের মুক্তির দাবিতে বিনিয়োগকারীরা বিক্ষোভ মিছিল, সমাবেশ ও মানববন্ধন করেছে। সমাবেশে তারা ঘোষণা দিয়েছে, শেয়ারবাজারে এভাবে দরপতন চলতে থাকলে তারা বিনিয়োগ বন্ধ করে দেবে। সকালে ¯স্থানীয় ব্রোকারেজ হাউস শ্যামল ইক্যুইটির সামনে জমায়েত হয়ে সেখান থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে নগরী প্রদক্ষিণ করে বিনিয়োগকারীরা। এরপর প্রেসক্লাবের সামনে তারা মানববন্ধন ও সমাবেশ করে। 
কুমিল্লা ও নোয়াখালী : গতকাল দুপুর ১২টার দিকে কুমিল্লা শহরের ৯টি ব্রোকারেজ হাউসের কয়েক শ বিনিয়োগকারী লেনদেন বন্ধ করে কান্দিরপাড়ে বিক্ষোভ এবং পূবালী চত্বরে অবস্থাান নেয়। তারা কুমিল্লা-৬ আসনের সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহারের কাছে তাদের ক্ষোভ জানায়। একপর্যায়ে বিনিয়োগকারীরা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধের উদ্দেশ্যে যেতে চাইলে জাঙ্গালিয়া বাসস্ট্যান্ডের কাছে পুলিশ তাদের লাঠিপেটা করে। এ সময় বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া হয়।
নোয়াখালীতে গতকাল দুপুর ১২টা থেকে ১টা পর্যন্ত মাইজদী ও জেলার প্রধান বাণিজ্যকেন্দ্র চৌমুহনীর প্রধান সড়কে বিক্ষোভ মিছিল করে বিনিয়োগকারীরা। এ সময় নোয়াখালী-ফেনী সড়কে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়।
ময়মনসিংহ : দুপুর ১২টার দিকে বিনিয়োগকারীরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে প্রেসক্লাবের সামনে এসে কিছুক্ষণ অবস্থান করে। বিক্ষোভ চলাকালে শহরের প্রধান সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

PaisaLive.com

Increase YouTube Views can help you.


Our Goal is to help your online business grow, YouTube videos often need a boost to go viral, and we can provide that. If you get enough video ratings or video favorites YouTube will give you honors such as most favorite, most viewed in a day/week/month, most commented or most rated. Once you receive these honors YouTube will place you on these pages. This can create millions of YouTube views. Also YouTube views and services will rank you higher when someone searches for a video like yours.
Get More Youtube Views

Saturday, January 08, 2011

Best Bollywood Actresses 2010

Top 10 HOT Bollywood Actress


Indian film industry, especially Bollywood, serves the fans with plenty of visual treat by exposing its heroines talent and assets. Bollywood actresses know exposing their assets and flesh is the way to stardom.
Here is my Top 10 list of HOT Bollywood Actresses with pictures and description. Beautiful and multi-talented actresses like the HOT Katrina Kaif, Priyanka Chopra, Aishwarya Rai, Priety Zinta can be seen in this list. With lot of new faces in Bollywood, this list is not up to date. Enjoy the beautiful pictures of sexy Bollywood Actresses as they contribute so much to the Indian film industry and are paid well.

1. Katrina Kaif
Top 10 HOT Bollywood Actress
Special talent: Doll face and a shapely ass that rivals Jennifer Lopez's
Beautiful , elegant, charming and angelic would be the best adjectives to describe this beauty, Katrina Kaif. Born in Hong Kong but bred in Hawaii and London, Katrina Kaif comes from a family of seven sisters. Her mother is English and her father is a NRI originally from London. Her debut film was Boom which doomed in the box-office. Her Hindi diction is poor but she is making every effort to improve her Hindi.
2. Priyanka Chopra
Top 10 HOT Bollywood Actress
Special asset: Stylish look and a tight ass
Priyanka Chopra is a 26 year-old girl is the copybook success story. She spent the requisite gym-hours, became Miss World and entered Bollywood. Where she actually slogged it out and earned herself the applause. After a hectic schedule with six films in a row this year, Priyanka said shooting for Dostana with Abhishek Bachchan and John Abraham was like a vacation and a rejuvenating experience for her.Priyanka is the pick of the glamour brigade, an extremely desirable pin-up babe who is a definite performer.
3. Aishwarya Rai
Top 10 HOT Bollywood Actress
Special asset: Slender body and a curvy figure
Born in a traditional south Indian family, Aishwarya Rai started modelling at a young age. This green-blue eyed beauty stole ads for many prestigious firms, the ones which brought her into the limelight were the garden sari and the pepsi ad. Crowned Miss femina '94 runner up, she was a hot favorite to win the miss world title, which she did! Her beauty and charm made her India's darling.
The girl with a million-dollar face combined with a strong personality and intelligence conquered Bollywood. Almost all the happening directors and producers of Bollywood started booking her dates for their projects. The success of Hum Dil De Chuke Sanam and Taal proved that she possessed and could deliver all that it takes to top the charts in Bollywood.
4. Preity Zinta
Top 10 HOT Bollywood Actress
Special asset: Beautiful face with dimple smile and talent.
Psychology graduate. Preity Zinta has won many awards for acting. Preity acts in just about one film a year. She made a special appearance in the film, Krrish, and while her screentime in Karan Johar's mammoth Kabhi Alvida Naa Kehna is very little, she's one of the few to escape all the critical rants. She is goodlooking, smart, spontaneous and intelligent, producers sign her up easily in their films.
5. Kareena Kapoor
Top 10 HOT Bollywood Actress
Since Kareena's debut in the 2000 film, Refugee, she has acted in nearly 30 films, majority of them bringing her critical success rather than commercial success. Despite this fact, she has emerged today as one of the top and most versatile actresses from the industry.
6. Sushmita sen
Top 10 HOT Bollywood Actress
Sushmita Sen made India proud as he won the Miss Universe crown in 1994. She was 19 then. She displayed great maturity when asked about the after feel of winning the crown. According to her, she told that it was more a responsibility than glamour alone.

7. Deepika Padukone

Top 10 HOT Bollywood Actress
8. Bipasha Basu
Top 10 HOT Bollywood Actress
9. Riya sen
Top 10 HOT Bollywood Actress
10. Mallika Sherawat
Top 10 HOT Bollywood Actress


microworkers internet earning site


http://www.microworkers.com/?Id=18829bdd

Thursday, January 06, 2011

Alliance Properties








Informationen über Paraguay
Paraguay ist ein Binnenland in Südamerika. Mit seinen 406.752 km² gehört es gemessen an
südamerikanischen Verhältnissen zwar zu den kleineren Flächenstaaten, verglichen mit
europäischen Ländern ist Paraguays Landesfläche jedoch größer als die Deutschlands und
der Schweiz zusammen.
Paraguay liegt im subtropischen Klimabereich Südamerikas, der Westen des Landes (Gran Chaco)
ist trocken, der Osten ist feuchter und fruchtbarer. Die Sommer sind ausgesprochen heiß, die
Winter sind mild bis kühl, die übrigen Jahreszeiten sind angenehm warm. Paraguay ist eine präsidiale
Republik mit knapp 7 Mio Einwohnern, die Hauptstadt ist Asunción.
Die Landessprachen sind Spanisch und - seit 1992 verfassungsmäßig verankert - Guarani eine der
Sprachen der Ureinwohner.

lliance Properties vermittelt Grundstücke aus Südamerkia, insbesondere Paraguay. Profitieren
Sie von der Erfahrung und dem Team vor Ort. Immobilien in Paraguay eignen sich neben der eigenen
Nutzung auch als Kapitalanlagen. Die zum Großteil unberührte Natur im südamerikanischen Land
bietet schöne und weitläufige Landschaften.
Auf unseren Seiten finden Sie detailierte Informationen über die Geschichte, Politik und Kultur in Paraguay
und ganz Südamerika. Stöbern Sie durch unsere Immobilien-Angebote aus Paraguay.

Alliance Properties
Nicole Schaadt
Schillerstraße 19
07407 Rudolstadt
Tel.: 03672-312777

eMail: info@alliance-properties.cc

New Year Givaway Contest Worth $500, 6 Winners Will Be Choosen – Contest #1

PRIZES DECIDED:
Winner #1:
  • Beautiful Flash Template from TemplateMonster worth $68 : Live Demo
  • Agivee Portfolio Based WordPress Theme from ThemeForest worth $32 : Live Demo
  • WinX DVD to iPod Ripper License code worth $29.95 [Easy-to-use solution to convert DVD to iPod, MP4, MOV on Mac/Win OS without quality loss]
  • 1000 Do-follow Bloglist in .txt file for Backlink Building purposes worth $25
Winner #2:
  • Beautiful Flash Template from TemplateMonster worth $72 : Live Demo
  • WinX DVD to iPod Ripper License code worth $29.95 [Easy-to-use solution to convert DVD to iPod, MP4, MOV on Mac/Win OS without quality loss]
  • 1000 Do-follow Bloglist in .txt file for Backlink Building purposes worth $25
Winner #3:
  • WinX DVD to iPod Ripper License code worth $29.95 [Easy-to-use solution to convert DVD to iPod, MP4, MOV on Mac/Win OS without quality loss]
  • 1000 Do-follow Bloglist in .txt file for Backlink Building purposes worth $25
Winner #4:
  • WinX DVD to iPod Ripper License code worth $29.95 [Easy-to-use solution to convert DVD to iPod, MP4, MOV on Mac/Win OS without quality loss]
Winner #5:
  • 1000 Do-follow Bloglist in .txt file for Backlink Building purposes worth $25
Winner #6:
  • 1000 Do-follow Bloglist in .txt file for Backlink Building purposes worth $25

Total Pageviews