Thursday, February 10, 2011

সাশ্রয়ী বাতি বিপর্যয় ডেকে আনবে!

সরকারের বিনামূল্যে বিতরণ করা কয়েক কোটি বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী বাতি দেশজুড়ে ব্যাপক পারদ দূষণের কারণ হয়ে উঠতে পারে। এর ফলে খাদ্যচক্র ও জলজ জীবনচক্রে নেমে আসতে পারে বিপর্যয়।

পরীক্ষামূলক সম্প্রচারে থাকা ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনের এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে এ তথ্য। সপ্তাহখানেকের মধ্যে পুরোদমে সম্প্রচারে আসবে ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশন।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ব্যবহারের পরে সঠিক পদ্ধতিতে প্রক্রিয়াজাত বা সংরক্ষণ করা না হলে কমপ্যাক্ট ফ্লুরোসেন্ট ল্যাম্প (সিএফএল) নামে পরিচিত এই বাতিতে ব্যবহৃত পারদ মারাত্মক পরিবেশ দূষণ ঘটাতে পারে। এই পারদ মাটি ও পানির সঙ্গে মিশে জনস্বাস্থের জন্য মারাত্মক হুমকি সৃষ্টি করতে পারে।



মাটিতে মেশা পারদ উৎপাদিত ফসলের মাধ্যমে দীর্ঘদিন পরেও মানুষের দেহে প্রবেশ করতে পারে।

প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, সরকার এরই মধ্যে বিনামূল্যে তিন কোটি সিএফএল বাতি বিতরণ করেছে। আরো ৫ কোটি বাতি বিতরণের অপেক্ষায় রয়েছে।

আর এ কর্মসূচি চালানো হচ্ছে নষ্ট বা বাতিল হয়ে যাওয়া বাতি সংরক্ষণ বা প্রক্রিয়াজাতকরণের বিষয়টি মাথায় না রেখেই।

স¤প্রতি প্রণিত সরকারের বৈদ্যুতিক ও ইলেকট্রনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নীতিমালাতেও সিএফএল বাতি থেকে নিঃসরিত পারদের ঝুঁকির বিষয়ে কিছু বলা হয়নি।

সরকারি কর্মসূচির বাইরে ব্যক্তিগত পর্যায়ে আরো অন্তত ১০ লাখ বাতি দেশজুড়ে ব্যবহৃত হচ্ছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

সরকারি ভাষ্য অনুযায়ী, ৮ কোটি বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী বাতি ৮৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সাশ্রয় করতে পারে, যা প্রতিদিন দেশে উৎপাদিত মোট বিদ্যুতের প্রায় এক চতুর্থাংশ।

তবে এসব বাতি ব্যবহারের পর যখন ফেলে দেওয়া হবে, তখন ২ লাখ ৪০ হাজার গ্রাম পারদ যুক্ত হবে পরিবেশের সঙ্গে। এই দূষণের গুরুত্ব অনুধাবন করে উন্নত বিশ্বের বহু দেশে পারদ বর্জ্য সংগ্রহ ও ব্যবস্থাপনার বিষয়ে আইন করা হয়েছে।

ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সরকারের পরিবেশ অধিদপ্তর সিএফএল বাতি বিষয়ক ঝুঁকিগুলো সম্পর্কে সচেতন বলে দাবি করলেও বাতিল বাতি সংগ্রহ করে সেগুলোর নিরাপদ ব্যবস্থপনার বিষয়ে নীতিমালা তৈরির বিষয়টি এখনো প্রক্রিয়াধীন বলে জানিয়েছে অধিদপ্তর তারা।

বাস্তুবিজ্ঞানী ড. হোসেন শাহরিয়ার ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনকে বলেছেন, পারদ দূষণের কারণে øায়ু বৈকল্য, খিঁচুনি, এমনকি পক্ষাঘাতের মতো রোগের শিকার হতে পারে লাখ লাখ মানুষ।

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, সিএফএল বাতি ব্যবহারকারী অধিকাংশ মানুষ বাতিল হয়ে যাওয়া বাতিগুলো নিজেদের বাড়ির আশেপাশেই ফেলছে। এর ঝুঁকি সম্পর্কে তাদের সচেতন করতে তেমন কোনো উদ্যোগও নেওয়া হচ্ছে না।

No comments:

Post a Comment

Total Pageviews